গবেষণার প্রস্তুতি এবং বৈজ্ঞানিক কার্যপদ্ধতি
খুব সহজ ভাষায় প্রকৃতিকে জানা এবং সে জ্ঞানকে আমাদের জীবনে কাজে লাগানোর জন্যই বিজ্ঞানের উৎপত্তি। কিন্তু কেবলমাত্র জ্ঞানের অন্বেষণই বিজ্ঞান নয়, সে অন্বেষণ কিছু সুনির্দিষ্ট ধাপ বা ব্যাকরণ অনুসরণ করে করতে হয় যাকে আমরা বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলে থাকি।
এখানে কীভাবে ধাপে ধাপে এর একটি গবেষণার অগ্রগতি করতে হয়, তার একটা সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে-
বানাতে হবে নোটবুক
একটা বিজ্ঞান গবেষণা শুরু করার প্রথমেই একটা নোটবুক বানাতে হবে। এই নোটবুকে তুমি গবেষণা নিয়ে লিখবে তোমার নিজের সব চিন্তাভাবনা, প্রশ্ন, অনুভূতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল, প্রকল্পের অগ্রগতি, যেসব পরীক্ষা করতে গিয়ে তুমি ব্যর্থ হয়েছ সেসব—এককথায় তোমার প্রকল্প সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
আইডিয়া কোথায় পাবো?
হাতে টেস্টটিউব আর রঙবেরঙের কেমিক্যাল নিয়ে তো ল্যাবকোট পড়ে দাড়িয়ে গেলাম, কিন্তু শুরুতেই সবাই যেখানে এসে অনেকক্ষণ ধরে মাথা চুলকায় তা হলো - আমরা গবেষণা করবো কী নিয়ে?
চিন্তা করে বের করো কোন গবেষণা করতে তোমার কাছে ভালো লাগবে? যেটা ভালো লাগবে, তুমি সেটাই করবে। গল্পে যদিও আইজ্যাক নিউটন আপেল গাছের নিচে বসে থেকে মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার ফেলে, বাস্তবে এমন যুগান্তকারী ভাবনা যে সবসময় দৈব পেয়ে যাবো তা কিন্তু নয়। তাই আইডিয়া পাওয়ার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ প্রস্তুতি। চোখ কান খোলা রাখো আর সবকিছুর মধ্যেই আইডিয়া খুঁজে পাওয়ার একটা একগুঁয়ে মানসিকতা তৈরি করো। রাস্তা দিয়ে হাঁটছো, চারপাশটা একটু খেয়াল করো; হয়তো পথের ওপারের ডাস্টবিনের ময়লাগুলো তোমার বাগানে ব্যবহার করার নতুন একটা পদ্ধতি মাথায় চলে আসতে পারে; মাইক্রোওয়েভ ওভেনে মজার ছলে দুটো আঙ্গুর রেখে দিয়েছো- হঠাৎ স্ফুলিঙ্গ তৈরি হলো! সেটার কারণ খুঁজতে লেগে পড়ো; কিংবা তোমার একুরিয়ামের মাছগুলোকে প্রতিদিন খাবার দিতে গিয়ে তোমার গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার সময় নষ্ট হচ্ছে তাই একটা রোবট বানিয়ে ফেললে যেটা সময় বুঝে ঠিকঠাক খাবার দিয়ে দিবে। মোট কথা, বাস্তবিক হও, তোমার আনাচে-কানাচেই নানা চোখ এড়িয়ে যাওয়া পরিচিত সমস্যা লুকিয়ে আছে৷
মনে রেখো, পৃথিবীর ছোটো-বড় প্রত্যেকটা সমস্যাই একেকটা প্রকল্পের আইডিয়া!
তবে নতুন কিছু তৈরির জন্য আগে দরকার প্রচুর পড়ার অভ্যাস তৈরি করা, বই পড়ো, ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করো, পৃথিবীর কোথায় কোন মানুষ কি অদ্ভুতুড়ে জিনিস বানিয়ে বসে আছে তার খোঁজ খবর রাখো, কতো কতো ম্যাগাজিন, জার্নাল ছড়িয়ে রয়েছে সেগুলো হাতে তুলে নাও৷
কিন্তু এটা সত্যি যে তোমরা যুগান্তকারী কোন উদ্ভাবন বা মৌলিক কোন গবেষণা করে ফেলবে কেউ সেটা আশা করছে না, কংগ্রেসে সবচেয়ে জরুরি যেটা হলো - তোমার কাজে বৈজ্ঞানিক কার্যপদ্ধতির কতটুকু প্রয়োগ হয়েছে এবং তোমার লেগে থাকার প্রবণতা। উদ্ভাবনের নেশায় এমন কোন আজগুবি ভাবনা যেমন বিনা জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা পিয়াজো ইলেকট্রিসিটি দিয়ে বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের মতো ভাবনা নিয়ে সময় নষ্ট করো না। সৃজনশীলতা মানে আজগুবি কিছু নয়, বরং তোমার কাজটিকে বাস্তবায়ন করতে ছোট ছোট পদক্ষেপে তুমি তোমার চিন্তাশক্তি কিভাবে ব্যবহার করেছো সেটা।কাজেই তুমি যখন প্রকল্পের বিষয় নির্বাচন করবে, অবিরাম গতিযন্ত্রের মতো কোন বিষয় নিয়ে কিন্তু কাজ করা যাবে না! শুধু অবিরাম গতিযন্ত্র নয়, বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত কোন সূত্র কিংবা তত্ত্বকে লঙ্ঘন করে, এমন কোন বিষয় নিয়েও কাজ করা যাবে না।
শিশুকিশোর বিজ্ঞান কংগ্রেসে মোটা দাগে প্রধানত চারটি বিভাগে তোমাদের আইডিয়াগুলোকে শ্রেণিবিভাগ করতে পারো
১. ফিজিকাল সায়েন্স (যেমন মেকানিক্স, তাপ, তরঙ্গ কিংবা আলোসংক্রান্ত গবেষণা ইত্যাদি)
২. ইনফরমেশন টেকনোলজি (যেমন প্রোগ্রামিং, ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনা, রোবটিক্স ইত্যাদি)
৩. লাইফ সায়েন্স (যেমন জীববিজ্ঞান কিংবা বংশগতিসংক্রান্ত গবেষণা)
৪. এনভায়রোনমেন্টাল সায়েন্স (যেমন রসায়ন, কৃষি কিংবা পরিবেশসংক্রান্ত গবেষণা)
প্রত্যেক ক্ষেত্রেই নতুন কোন ভাবনা খুঁজে পাওয়ার জন্য সেই মাইন্ডসেট তৈরি করা খুব জরুরি। যেমন ধরো তুমি ফিজিক্যাল সায়েন্স নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছো, শুরুতেই নিজেকে বিশ্বাস করাতে হবে যে তুমি এ বিষয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। এরপর একটা ফিজিক্যাল সায়েন্সের চশমা চোখে পড়ে ফেলে সবকিছুকে ওই লেন্সে দেখতে শুরু করে দাও। এটা সত্যি যে পুরো গবেষণার একটা বড় অংশ তোমাকে আইডিয়া নির্বাচন আর সেটার যৌক্তিকতা বিচারে কাটাতে হবে।
এবার শুরু গবেষণা!!
গবেষণা করার সময় তোমাকে সায়েন্টিফিক মেথড বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে যার বেশ কিছু ধাপ রয়েছে। সেগুলি হচ্ছে:
১। প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা
২। প্রশ্নের বিষয়টা নিয়ে গবেষণা করা
৩। হাইপোথিসিস বা অনুকল্প তৈরি
৪। পরীক্ষানিরীক্ষা করার প্রস্তুতি নেয়া এবং পরিকল্পনা তৈরি
৫। পরীক্ষানিরীক্ষা করা
৬। পরীক্ষার ডেটা সংগ্রহ এবং লিপিবদ্ধ করা
৭। সিদ্ধান্তে আসা
৮। গবেষণা প্রকাশ করা
বিষয় নির্ধারণ:
বিষয় নির্ধারণ বলতে গবেষণার কোন ক্ষেত্র নির্ধারণ বোঝানো হচ্ছে না, বরং নির্দিষ্ট কোন প্রশ্ন করাকে বোঝানো হচ্ছে। যেমন ধরো “পানির স্ফুটনাঙ্ক” গবেষণার বিষয় নয়। “পানির স্ফুটনাঙ্কের উপর ফিটকিরির ঘনমাত্রার প্রভাব” এটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। তাই শুরুতে এরকম নির্দিষ্ট কোন প্রশ্ন খুঁজে নিতে হবে যার উত্তর এই গবেষণার মাধ্যমে পাওয়া যাবে বলে তুমি মনে কর।
গবেষণার আগের গবেষণা (ব্যাকগ্রাউন্ড রিসার্চ):
সব বিষয়েই কেউ না কেউ কোন না কোন গবেষণা করে রেখেছেন। সুতরাং তাদের গবেষণার ফলাফল জানতে পারলে তোমার রিসার্চের জন্যই ভালো। একারণে তোমার বিষয় নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। গুগল, উইকিপিডিয়া সার্চ করে প্রচুর তথ্য পেতে পারো, তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হচ্ছে ইউনিভার্সিটি লেভেলের টেক্সটবুক এবং আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত সাময়িকীতে (যেমনঃ Nature, Lancet, Springer...) প্রকাশিত রিসার্চ পেপার। রিসার্চ পেপার খুঁজে পেতে scholar.google.com এ সার্চ করলেই প্রচুর পরিমাণে গবেষণাপত্র চলে আসবে। গবেষণাপত্র একটু কাটখোট্টা ভাষায় লেখা থাকে। তাই শুরুতে বেশ সমস্যা হবে। কিন্তু অভ্যাসটা হয়ে গেলে আজীবন কাজে লাগবে।
তবে দুঃখের বিষয় হলো, এসময়েই দেখা যাবে হয়ত তুমি যেই গবেষণা করতে চাচ্ছো হুবহু একই গবেষণা অন্য কেউ করে রেখেছে এবং এরকমটা হওয়াই স্বাভাবিক।
হাইপোথিসিস:
অন্য গবেষকদের গবেষণা এবং পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান থেকে তোমাকে তোমার রিসার্চের ফলাফল কী হতে পারে সেটা অনুমান করতে হবে। এই অনুমানের সাথে পরবর্তীতে তোমার পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে দেখতে হবে। ধরো, অন্যদের করা কাজ থেকে তোমার মনে হল ফিটকিরি দ্রবীভূত থাকলে পানির স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যাবে এবং ফিটকিরির ঘনমাত্রা এবং স্ফুটনাঙ্ক হবে সমানুপাতিক। এটা এই গবেষণায় হাইপোথিসিস হতে পারে। প্রজেক্টের ক্ষেত্রে “তোমার তৈরি যন্ত্র দ্বারা কোন বাস্তব সমস্যার সমাধান হবে” সাধারণত এরকমটা তোমার হাইপোথিসিস হতে পারে।
তবে খেয়াল রাখতে হবে তোমার হাইপোথিসিস যেন কোন প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বের বিরোধী না হয়। যেমন আমরা থার্মোডিনামিক্সের সূত্রগুলো বেশ ভালো করে জানি এবং কোটি কোটি পরীক্ষা দ্বারাও প্রমাণিত। সুতরাং “অবিরাম গতিযন্ত্র”- ধরণের কিছু তোমার গবেষণার বিষয় বা অনুসিদ্ধান্ত হতে পারবে না।
পরীক্ষার পরিকল্পনা (এক্সপেরিমেন্ট ডিজাইনঃ)
যেকোনো পরীক্ষা শুরু করার আগে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হলো তোমার আলোচিত বিষয়কে প্রভাবিত করছে এমন সব নিয়ামকগুলো খু্ঁজে বের করা। ধরো তুমি গবেষণা করে বের করার চেষ্টা করছ মটরশুঁটি গাছের বৃদ্ধিতে চা পাতার কোন প্রভাব আছে কিনা, এখানে শুরুতেই তাই খুঁজে বের করে ফেলতে হবে সত্যিকার অর্থেই গাছের বৃদ্ধিতে অন্য কি কি প্রভাবক কাজ করে যেমন - আলো, পানি, তাপমাত্রা, মাটির উপাদান ইত্যাদি। এতো গুলো চলক নিয়ে তো একসাথে কাজ করা সম্ভব নয়, তাই শুধু মাত্র চা পাতার কতটুকু প্রভাব বোঝার জন্য তোমাকে অবশ্যই অন্য সব প্রভাবককে স্থির রাখতে হবে। এখন তুমি- কোন জাতের মটরশুঁটি নিয়ে কাজ করবে, কোন পরিবেশে করবে সেটা কি ঘরে না বাইরে, কতগুলো চারা নিয়ে পরীক্ষা চালাবে এসব নিয়ে একটা সার্বিক পরিকল্পনা দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারো। মোটকথা, তুমি কি করতে চাচ্ছো, তার সাথে জড়িত সব প্যারামিটার গুলোকে একসাথে নিয়ে একটা পরিকল্পনা মাথার ভেতরে এঁকে ফেলাই গবেষণার এই ধাপের কাজ। আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যত বেশি পরীক্ষা করা হবে ফলাফল তত নিঁখুত হবে।
পরীক্ষা:
এবার পরীক্ষণ এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ধৈর্যের ধাপ। এক পরীক্ষা একাধিক বার করতে হতে পারে মাঝপথে গণ্ডগোল বাধার জন্য। এটাই স্বাভাবিক; গণ্ডগোল না হওয়াই অস্বাভাবিক। মাপজোক করে প্রচুর ডাটা নিতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিক যন্ত্র ব্যবহার করে যথাসম্ভব নিঁখুত মাপ নিতে হবে। যেমন, গলনাঙ্কের উপর ফিটকিরির প্রভাব মাপতে বেশি ফিটকিরি দিলে কম তাপমাত্রায় ফুটবে কি না সেটা বের করে নোট করার নাম পরীক্ষা নয়। বরং স্বীকৃত এককে কোন ঘনমাত্রার জন্য কত তাপমাত্রাতে পানির স্ফুটন শুরু হলো সেটা জরুরি।
তবে প্রত্যেকটি পরীক্ষাই যে তোমাকে হাতে কলমে করতে হবে এরকম কোন কথা নেই। বিজ্ঞানে "Thought experiment" বলে একটা ব্যাপার আছে যেখানে তুমি যুক্তিতর্কের সাহায্যেই একটি সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারো৷ সেরকম ক্ষেত্রে তোমাকে অবশ্যই শক্ত যুক্তি হাজির করতে হবে।
উপাত্ত বিশ্লেষণ (ডেটা এনালাইসিস):
উপাত্ত বিশ্লেষণ হল উপাত্তগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করে তাদের মাঝে কোন সম্পর্ক খুঁজে বের করা।এর জন্য তোমাদের স্কুলের বইয়ের স্ট্যাটিসটিক্স একটু জানলে হবে। ফলাফলগুলোকে বিভিন্ন চার্ট/গ্রাফ আকারে প্রকাশ করবে। মাইক্রোসফট এক্সেল, গুগল চার্ট, ডেসমস ইত্যাদি বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব সহজে ডাটা এনালাইসিস করা যায়। যেমন স্ফুটনাঙ্কে ফিটকিরির প্রভাবের গবেষণাতে x অক্ষে ঘনমাত্রা এবং y অক্ষে স্ফুটনাঙ্ক নিয়ে গ্রাফে বিন্দু বসানো যেতে পারে। এরপর এই বিন্দুগুলোর মধ্য দিয়ে এক্সেল/অনলাইন গ্রাফিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে best fit line এঁকে দিতে হবে।
ফলাফল:
এখন তোমার ফলাফলকে তোমার হাইপোথিসিসের সাথে মিলিয়ে দেখ। হাইপোথিসিস সম্পূর্ণ না মেলাই স্বাভাবিক। ধরো স্ফুটনাঙ্ক আসলেই ফিটকিরির ঘনমাত্রার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেল; কিন্তু সরলরেখা হলোনা। কিন্তু তাতে কোনই সমস্যা নেই। কেননা তুমি এখন সঠিক তথ্যটি জানো। এবং তোমার রিসার্চের লক্ষ্যই হলো সঠিক তথ্যটি জানা, হাইপোথিসিসকে সত্য প্রমাণ করা নয়।
গবেষণার পরের গবেষণা:
নিখুঁত গবেষণা বলতে কিছু নেই। তোমার গবেষণায় যেসব সীমাবদ্ধতা ছিল, ফলাফল কেন আকাঙ্ক্ষিত হয় নি, আবার করতে চাইলে কীভাবে করবে এগুলো লিখতে হবে। তোমার এই গবেষণা হতে পারে অন্য কারো ব্যাকগ্রাউন্ড রিসার্চের অংশ। অন্য কেউ যেন এটা পড়ে নতুন গবেষণা করতে পারে এমন ভাবে গবেষণাটি লিখতে হবে।
এখানে বৈজ্ঞানিক কার্যপদ্ধতিকে যেভাবে বর্ণনা করা হলো সেটা এক্সপেরিমেন্টাল সায়েন্সের জন্য। কিন্তু যদি কেউ থিওরেটিক্যাল কাজ করতে চায়? অথবা ধরা যাক গণিতের কিছু নিয়ে কাজ করতে চায়? সেক্ষেত্রে হাইপোথিসিস থেকে পরীক্ষণ পর্যন্ত অংশগুলোর বদলে গাণিতিক প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে দেখাতে হবে। সম্ভব হলে ডাটা এনালাইসিস অংশে এই সূত্র / থিওরেমকে আগের কোন গবেষণার ফলাফল বা random কোন পরিস্থিতি দিয়ে টেস্ট করিয়ে দেখাতে হবে।
আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত যেই ভুলটুকু করে সেটি হল, তারা গতানুগতিক সায়েন্স প্রজেক্টের বিষয় নির্ধারণ করে এবং একটু পড়াশোনা করে হাইপোথিসিস দাঁড় করায়, এরপর মাঝের ধাপ বাদ দিয়ে হাইপোথিসিসকে ফলাফল হিসেবে ঘোষণা করে সেটাকেই সায়েন্স ফেয়ারে প্রজেক্ট আকারে প্রকাশ করে দেয়। তাহলে বুঝতে পারছো কেন এগুলোকে বিজ্ঞান-গবেষণা বলে স্বীকৃতি দেয়া হবেনা?